Monday, August 1, 2016

রেসিপিঃ কাচ্চি বিরিয়ানি

বিরিয়ানি নিয়ে আর কি বলব। উইকিপিডিয়াতে একটু আগে খুঁজতে গিয়ে দেখলাম “বিরিয়ানি বা বিরানি দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলো, বিশেষ করে ভারত, বাংলাদেশ, মিয়ানমার প্রভৃতি দেশে প্রচলিত এক বিশেষ প্রকারের খাবার যা সুগন্ধি চাল, ঘি, গরম মশলা এবং মাংস মিশিয়ে রান্না করা হয়। এটি সাধারনত বিশেষ অনুষ্ঠানে অতিথি আপ্যায়নে পরিবেশিত হয়। তেহারীর সাথে এর মুল পার্থক্য হলো এতে মাংসের টুকরা বেশ বড় হয়।” সামান্য কয়েক লাইনে বেশ সারস বর্ননা।
চলুন বিরিয়ানি রান্না দেখি। অনেকে বিরায়ানি রান্না কঠিন মনে করেন আসলে তা নয়। তবে বিরায়ানি রান্নার সময় একটু বেশি সর্তক থাকা এবং নানান পদের মশলাপাতি লাগে, এই যা! তবে মজার ব্যাপার হচ্ছে, এখন প্যাকেটে বিরিয়ানির মশলার মিক্স পাওয়া যায়, যা দিয়ে খুব সহজে বিরিয়ানি রান্না করে ফেলা যায় (এটা আর একদিন দেখিয়ে দেব)। চলুন…।


মশলাপাতিঃ

এই মশলা গুলোর মিক্স আজকাল প্যাকেটে পাওয়া যায়। এই মশলা গুলো পিষে কাই করে নিতে হবে। (নানা পদের মশলার ছবি দিয়ে একটা সেকশন আছে, যারা মশলা চিনতে চান তারা দেখে নিতে পারেন, মশলা/ভেজষ চিনুন।)


উপকরণঃ
– খাসীর গোসতঃ হাফ কেজি (আমরা চার জনের অনুমানে রান্না করেছিলাম, কিন্তু রান্নার পর মোট ছয় জনে খেতে পারত বলে মনে হয়েছে, খাসীর মাংস বেশী না খাওয়াই ভাল! হা হা হা)
– কালি জিরা চালঃ পনে এক কেজি (বাসমতি লম্বা চাল হলে আরো জমবে)
– পেঁয়াজ কুচিঃ হাফ কাপ
– আদা বাটাঃ ২ টেবিল চামচ
– রসূন বাটাঃ ২ টেবিল চামচ
– জিরা বাটাঃ ১ চা চামচ
– ধনিয়া বাটাঃ ১ চা চামচ (এটা গরম মশলার সাথে বাটা হয়েছিল)
– গোল মরিচ গুড়াঃ এক চিমটি
– দারুচিনিঃ ৩/৪ টুকরা
– এলাচিঃ ৪/৫ টা
– পুস্তদানাঃ এক চিমটি
– জয়ফলঃ একটার ১০ ভাগের এক ভাগ
– জয়ত্রীঃ এক চা চামচ হয় এমন
– তেজ পাতাঃ ২/৩ টা
– বাদাম বাটাঃ ২ টেবিল চামচ
– কাঁচা মরিচঃ ঝাল বুঝে পরিমান মত (গোটা)
– টক দইঃ বড় এক কাপ (ঘরে পাউডারের দুধে ভিনেগার দিয়েও বানিয়ে নিতে পারেন)
– ঘিঃ এক টেবিল চামচ
– লবনঃ পরিমান মত
– তেলঃ হাফ কাপ বা তার বেশী
– গরম পানিঃ প্রয়োজনে লাগলেই দেয়া হবে।
প্রনালীঃ

তেল গরম করে খাসির গোসত দিয়ে দিন। তেলে এক চামচ ঘি দিয়ে দিন (না থাকলে নাই)।

এর পর উপরে উল্লেখিত সব মশলাপাতি একে একে দিয়ে দিন। লবন দিতে ভুলবেন না।

বড় কাপের এক কাপ দই দিন এবং ভাল করে মিশিয়ে নিন।

কাঁচা মরিচ ও তেজপাতা দিন।

এবার ঢাকনা দিয়ে পাহারা দিতে থাকুন। মাঝে মাঝে নাড়িয়ে দেবেন এবং খেয়াল রাখবেন যাতে পাত্রের তলায় না লেগে যায়। গোসত নরম বা মজে যাবার জন্য অপেক্ষা করুন, গোসত নরম না হলে আরো পানি (গরম) দিন এবং জ্বাল দিন।

ঠিক এমন একটা অবস্থায় এসে যাবে। গোসত নরম হয়ে যাবে। লবন দেখে নিতে পারেন।

এবার ধুয়ে পানি ঝরিয়ে রাখা চাল দিয়ে দিন।

চাল মিশিয়ে এবার পানি দিন (সামান্য গরম হলে ভাল নতুবা ঠান্ডা হলেও আপত্তি নাই)। কিন্তু কথা হচ্ছে কতটুকু পানি দেবেন। চালের উপরে মোটামুটি যেন এক ইঞ্চি পানি বা চাল দেখা যায় এমন করে। এখানে আর একবার লবন দেখুন, পানি কটা হতে হবে।

এবার ঢাকনা দিয়ে চুলার পাশে বসে উপরওয়ালার নাম জেপে যান! হা হা হা, আরে চিন্তার কিছু নাই, অন্য চুলা থাকলে তাতে কিছু গরম পানি রাখুন।  মিনিট বিশেক লাগতে পারে, তবে মাঝে মাঝে ঢাকনা উলটে নেড়ে দেবেন। এখানে সামান্য খেয়াল রাখতে হবে, চাল নরম হয়ে পানি কমে আসলে জ্বাল কমিয়ে দমের ব্যবস্থা করতে হবে।

ঢাকা শহরে দম দেবেন কি করে। পাত্রের মুখ বন্ধ/এয়ার টাইট করে উপরে নীচে কয়লা দেয়াকে দম বলে। এই দম দেয়ার দরকার নেই! হা হা হা।। সাধারন তাওয়ার উপর বিরিয়ানির পাত্রটি রেখে দিন এবং এমন ঢাকনা ব্যবহার করুন যাতে বাস্প বের না হতে পারে। ব্যস…। চুলার জ্বাল কমিয়ে দিন। আস্তে আস্তে গরম হবে আর চাল নরম হয়ে যাবে।

খেয়াল রাখবেন চাল যাতে বেশি নরম না হয়ে যায়। রং দেখেই মন জুড়াবে!

পরিবেশনের জন্য প্রস্তুত।

আহ…।।

সামান্য সালাদ বা আচার হলে মন্দ হয় না।

সাবাড় করে ফেলুন! সাথে আছি……।
(বিরিয়ানীর প্যাকেট মশলা দিয়ে আর একদিন আর একবার বিরিয়ানি রান্না দেখিয়ে দেয়ার ইচ্ছা থাকল। ব্যচেলর ভাই বোনদের জন্য আরো সহজ হবে। চান্সে আমাদের পেটেও আবার পড়বে!)
সবাইকে বিরিয়ানি শুভেচ্ছা।

No comments:

Post a Comment